স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন শাহ সেতু ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় পদ্মা নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এতে এসব স্থাপনার পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক এখন ঝুঁকিতে রয়েছে। পদ্মার নদীতে বসানো হয়েছে অসংখ্য ছোট বড় ড্রেজার। হাইকোর্টের স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। পদ্মা নদীতে অবাদে এই বালু লুট করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন শাহ সেতু ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকা থেকে পদ্মা নদীতে বালু তোলা হচ্ছে। এতে এসব স্থাপনার পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কও ঝুঁকিতে আছে। এগুলোর রক্ষার জন্য উচ্চ আদালত পদ্মায় বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করেছেন। তা বাস্তবায়নে হাইকোর্টের নির্দেশে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন মনিটরিং টিম গঠন করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালানো হয়েছে অভিযান। তারপরও হরিপুরচরে সারাদিনে আন্ত শতাধিক বড় বড় বালগেট ও নৌকাতে চলছে বালি উত্তোলন কার্যক্রম । নদী থেকে সংগ্রহ করা বালু পাঠানো হচ্ছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়। প্রভাবশালী ব্যক্তি সিন্ডিকেট করে বালুর ব্যবসা করছেন। তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন। ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ও লক্ষিকুন্ডা এবং পাবনা সদর উনিয়ন।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের বারোমাইল থেকে মসলেমপুর পর্যন্ত এলাকাজুড়ে পদ্মা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে কৃষি জমি। কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আতঙ্কে এখন পদ্মা নদী পাড়ের মানুষ। বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার কারণে পদ্মা নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই ভাঙন দ্রুত রোধ করা না গেলে নতুন করে হুমকির মুখে পড়বে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। ভেড়ামারা-কুষ্টিয়া ও ভেড়ামারা-পাবনা মহাসড়ক এখন হুমকির মুখে রয়েছে।
লক্ষিকুন্ডা ইউনিয়নের এলাকার কৃষক আক্কাস বলেন, ইতিমধ্যে প্রায় ২ বিঘা জমি পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। দিন দিন পদ্মা নদীর ভাঙন বেড়ে চলেছে। বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার কারণে পদ্মা নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।
পাকশী ইউনিয়নের রিপন বলেন, বালু উত্তোলনের কারণে তাঁরা হুমকির মুখে। পদ্মার তীরে তাঁর ২০ বিঘা জমি ছিল। ভাঙতে ভাঙতে এখন ১০ বিঘা অবশিষ্ট রয়েছে। তাও যেকোনো মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয়র কাছে থেকে জানা যায়, তাঁর ১০ বিঘা জমির মধ্যে অবশিষ্ট রয়েছে ২ বিঘা। তিনি অবিলম্বে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান। পদ্মা নদীতে রীতিমতো বালু লোপাটের মহোৎসব চলছে যা পরিচালিত হচ্ছে প্রভাবশালী চক্র ও ক্ষমতাসীন দলের লোক দ্বারা। এটি রোধে প্রশাসনের কোন দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ চোখে পরে না।
বালু উত্তোলনকারীদের একজন টনি বিশ্বাস বলেন, তাঁদের কাছে এ-সংক্রান্ত হাইকোর্টের কাগজপত্র রয়েছে। এ ব্যপারে লক্ষিকুন্ডা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এমদাদুল হক জানায়, বালু উত্তোলন কারিদের কাছে হরিপুর চরের বৈধ কাগজপত্র আছে ।
Leave a Reply