রংপুরের গঙ্গাচড়ায় পাচারকালে কৃষি প্রণোদনার ১৮০ বস্তা ধানবীজ ও সার জব্দ করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদের মাঠ ও স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে এগুলো জব্দ করা হয়। জব্দ পণ্যের মধ্যে রয়েছে ১২ বস্তা (প্রতিটিতে ৫০ কেজি) টিএসপি সার, ১৬৭ বস্তা (প্রতিটিতে ১০ কেজি) উফশী জাতের ধানবীজ ও এক বস্তা পাটের বীজ। এ ঘটনায় রাতেই উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনসহ কয়েকজনের নামে মামলা করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান। আসামি ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে জানালেও, তদন্তের স্বার্থে অন্য আসামিদের নাম প্রকাশ করেননি গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল হোসেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার গুদাম থেকে দুটি ভ্যানে ১২ বস্তা সার ও ১৪ বস্তা ধানবীজ বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বিষয়টি টের পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন ভ্যান দুটি ধরে চালকসহ ইউএনও কার্যালয়ে যান। ইউএনও নাহিদ তামান্নার জিজ্ঞাসাবাদে ভ্যানচালক মিঠু মিয়া ও শরিফুল ইসলাম জানান, এগুলো কৃষি অফিস থেকে নেওয়ার জন্য ব্যবসায়ী আলমগীর তাঁদের পাঠিয়েছেন। পরে ইউএনও গঙ্গাচড়া থানা পুলিশকে জানালে আলমগীরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বাকি ধান ও পাটবীজ উদ্ধার করে। তবে অভিযানের খবরে আলমগীরসহ বাড়ির লোকজন পালিয়ে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা পরিষদের দুই কর্মকর্তা ও স্থানীয় কৃষকরা জানান, প্রণোদনার ধানবীজ ও সার কৃষকদের না দিয়ে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাজারে বিক্রি করে আসছেন। এ অপকর্মের হোতা কার্যালয়ের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান। অথচ তিনিই ধানবীজ ও সার উদ্ধারের ঘটনায় মামলা করেছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার স্লিপ নিয়ে গুদাম থেকে কৃষকদের মাঝে ধানবীজ ও সার বিতরণ করেছি। কৃষকরা বিক্রি করেছেন কি না, জানি না।’ ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ধানবীজ ও সার সবাই এভাবেই কৃষি অফিস থেকে নিয়ে যায়। এর ভাগ চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য থেকে সাংবাদিকরাও পান। কিন্তু একটি মহলের স্বার্থরক্ষা না হওয়ায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মারুফা ইফতেখার সিদ্দিকা বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply