ভারতে ছত্তিশগড়ে মাওবাদীদের অতর্কিত হামলায় ১০ পুলিশসহ ১১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে বলা হয়েছে, বুধবার ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দুরে আদিবাসী অধ্যুষিত বস্তার অঞ্চলের দান্তেওয়ারা জেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। মাওবাদীরা ৫০ কেজি ওজনের ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের (আইইডি) বিস্ফোরণ ঘটায়। নিহত ১০ পুলিশ ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের (ডিআরজি) সদস্য। এছাড়া এক গাড়ী চালকও নিহত হয়েছেন। গত কয়েকমাসের মধ্যে মাওবাদীদের চালানো এটিই সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এই সময়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আইইডি বিস্ফোরণের জেরে রাস্তায় তৈরি হয়েছে বড় গর্ত। তদন্তকারীদের অনুমান, পিচের রাস্তা কেটে সেখানেই আইইডি পুঁতে রেখেছিল মাওবাদীরা। সূত্র মারফৎ খবর পেয়ে ডিআরজির একটি টিম মাওবাদীদের ধরতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার পথেই তাদের গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। তদন্তকারী অনুমান করছেন যে, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এই রাস্তা দিয়েই যে ফিরবে, সেই তথ্যও আগেভাগে জানা ছিল মাওবাদীদের। পুলিশের গাড়ি আসার কিছুক্ষণ আগে রাস্তা কেটে আইইডি বসানো হয়। অগভীর গর্ত করে বিস্ফোরক রাখা হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে। গত শুক্রবার মধ্য প্রদেশের বালাঘাট থানার পুলিশ মাওবাদীদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান চালায়। মহারাষ্ট্র সীমানায় এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় দুই মাওবাদী মহিলা নেত্রীর। নিহত দু’জনের নাম সুনীতা ও সরিতা। দু’জনেই মাওবাদীদের গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিল। তাদের প্রত্যেকের মাথার দাম ছিল ১৪ লাখ টাকা। এই দু’জনের মৃত্যুর বদলা নিতেই মঙ্গলবারের হামলা কিনা, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বস্তার অঞ্চলের পুলিশের মহাপরিদর্শক পি সুন্দররাজ বলেছেন, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষী আরও বাড়িয়ে ওই অঞ্চলে চিরুনি অভিযান শুরু করা হয়েছে। গত সপ্তাহেই ছত্তিশগড়ের বিজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক বিক্রম মান্ডবীর গাড়িতে হামলা চালায় মাওবাদীরা। তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তবে প্রাণে বেঁচে যান বিধায়ক। হামলার ঘটনার কড়া নিন্দা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঘটনার পরপরই কংগ্রস শাসিত ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের সঙ্গে কথা বলেছেন অমিত। পুলিশের মহাপরিদর্শক পি সুন্দররাজ বলেছেন, মাওবাদীদের আক্রমণটি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার একটি মরিয়া প্রচেষ্টা বলে মনে হচ্ছে। কারণ, তারা ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র এবং ধারাবাহিক অভিযানের কারণে পিছু হটছে। যা সাম্প্রতিক সময়ে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে একের পর এক সাফল্য অর্জন করেছে। সরকারের পুনর্বাসন নীতি অনুসরণ করে প্রতি বছর ৪০০ জনেরও বেশি মাওবাদী আত্মসমর্পণ করছে বলে সুন্দররাজ জানান।