বেনাপোল বন্দরে পঁচে যাচ্ছে আমদানি করা আলু।
মিলন হোসেন বেনাপোল,
প্রচন্ড গরমে বেনাপোল বন্দরে ভারত থেকে আমদানিকৃত আলু খালাসের আগেই ট্রাকে পঁচে যাচ্ছে।
গত সোমবার (২২ এপ্রিল) রাতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ১৬ ট্রাকে ৭ হাজার ৪০০ ব্যাগে ৩৭০ মেট্রিক টন আলু আমদানি হয়।এই আমদানিকৃত আলু ভারত থেকে লোড করে বেনাপোল বন্দরে পৌঁছাতে কয়েকদিন লেগে যায়। এদিকে আবার প্রচন্ড গরম। সে কারনে ট্রাকে থাকা আলু পঁচে যাচ্ছে দেখা যাচ্ছে।
উক্ত আমদানিকৃত আলু খালাস করার জন্য কাস্টমসে কাগজপত্র দাখিল করেছেন ট্রান্সমেরিন লজিস্টিক নামে এক সিএন্ডএফ এজেন্ট। আলুর আমদানি কারক বাংলাদেশের ইন্টিগেটেড ফুডস এন্ড বেভারেজ।
বেনাপোলসহ দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে আলু আমদানি বৃদ্ধি পেলেও বাজারে দিন দিন দাম বাড়ছেই। বর্তমানে আলুর দাম কেজি প্রতি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হলে ও গতবছর এ সময়ে ২২ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। আলুর আমদানি বাড়লে ও বাজার সিন্ডিকেটের কারণে কোন সুবিধা পাচ্ছেনা বলে সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ। এদিকে প্রচন্ড গরমে ট্রাকে থাকা আলু পঁচতে শুরু করেছে। তবে বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার বলেছেন দ্রুত যাতে পণ্য চালানটি খালাস দেওয়া যায় সেজন্য আমরা সর্বাত্বক সহযোগীতা করে যাচ্ছি।
জানা যায়, দেশে প্রতিবছর আলুর চাহিদা ১ কোটি মেট্রিক টনের মত। আর চাহিদার বিপরীতে সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষি অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে আলুর উৎপাদন ছিল ১ কোটি ১২ লাখ মেট্রিক টন। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হলেও মজুদ করতে ব্যবসায়ীরা সারা বছর কমবেশি আলু আমদানি করে থাকে। বৈশ্বিক মন্দায় গেল বছর যখন দেশে নিত্য পণ্যের দাম বাড়ে তখন পাল্লা দিয়ে আলুর দাম বেড়ে দাড়ায় কেজি প্রতি ৮০ টাকা। এতে সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ও সরবরাহ বাড়াতে গত বছরের ৩০ অক্টোবর বিভিন্ন শর্ত দিয়ে বেসসরকারি ভাবে আলু আমদানির অনুমতি দেয়।
পরবর্তীতে গেলো বছরের ২ নভেম্বর থেকে শুরু হয় আলু আমদানি। বেনাপোল সহ দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে আলু আমদানি বাড়লে ও ভরা মৌসুম ও তার সুফল পাচ্ছেনা সাধারণ ক্রেতারা। ব্যবসায়ী সিন্ডকেটরা দিন দিন আলুর দাম বাড়াচ্ছে।এতে ক্ষোভ সাধারণ ক্রেতাদের। এদিকে ভারতের ২ শো থেকে ২২০ কিলোমিটার দূর থেকে আলু আমদানি এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কয়েকদিন সময় লেগে য়ায়। এ সময় পর্যন্ত আলু গাড়িতে তেরপোল দিয়ে বাধা থাকে। অন্যদিকে প্রচন্ড। এ কারনে খালাসের আগেই বন্দরে ট্রাকের মধ্যে আলু পঁচে যাচ্ছে।
আলুবাহী বাংলাদেশি ট্রাক চালকেরা জানান, তারা ভারতীয় ট্রাক থেকে আলু খালাস করে রংপুর নিয়ে যাবেন। কিন্তু গরমের কারনে বন্দরের মধ্যে ট্রাকে আলু বস্তাতেই পঁচে যাচ্ছে। দ্রুত খালাস না হলে আরও নষ্ট হয়ে যাবে।
বেনাপোল বাজারের আলু বিক্রেতা সবুজ হাসান জানান, বাজারে আলুর সরবরাহ কম থাকায় দাম কমছেনা। বর্তমানে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি আলু।
সাধারণ ক্রেতারা জানান, ভারত থেকে আলু আমদানি হলেও সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে দাম কমছেনা। বাজার মনিটরিং না থাকায় বিক্রেতারা নিজেদের ইচ্ছে মতো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। ঠিকমতো তদারকি করলে দাম কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন। ।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডে দায়িত্বরত এডি কাজি রতন আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে জানান, ভারত থেকে গত সোমবার ৩৭০ মেট্রিক টন আলু আমদানি হয়েছে। এসব আলু মান পরীক্ষা শেষে দ্রুত খালাসের জন্য সহযোগীতা করা হচ্ছে।তবে প্রচন্ড গরমের কারনে কিছু কিছু বস্তায় সামান্য পরিমাণ আলু পঁচা দেখা যাচ্ছে। আমদানি কারকরা যত তাড়াতাড়ি আলুর চালানগুলো খালাস নেবেন ততোই ভালো।