মো. রিয়াজুল ইসলাম, পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর দুমকীতে ব্রাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচীর আয়োজনে বাড়ি বাড়ি বাল্যবিবাহ রুখতে গণনাটক প্রদর্শনীতে অভিনয় করে অগ্রযাত্রা গণনাটক দল।
মন্ত্রোচ্চারণের সঙ্গে চলছে মালাবদলের প্রস্তুতি। আচমকা ছন্দপতন। বয়স কম থাকার কারণে পুলিশ-প্রশাসনের লোক এসে রুখে দিলেন বিয়ে। মুহূর্তে থামল সানাই। থমথমে বিয়েবাড়ি। সিনেমা নয়। নয় বাস্তবও। নাটকে এ ভাবেই তুলে ধরা হল সচেতনতার বার্তাবহ নাটক ‘দিন বদলের ডাক’।
রবিবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার উত্তর রাজাখালি গ্রামের চন্দ্র কুমার ফকির বাড়ির আঙিনায় ওই নাটক মঞ্চস্থ হয়। ওই নাটকে অভিনয় করে উচ্ছ্বসিত কুশীলবেরা।
নাটকে দেখানো হয়, কী ভাবে একটি মেয়েকে স্কুল থেকে ছাড়িয়েঅল্প বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কী ভাবেই বা যৌতুকের আড়ালে চলছে পণপ্রথা। নাটকে রয়েছে, কী ভাবে বিয়ে রুখে স্কুলে ফেরানো হচ্ছে মেয়েটিকে। শুধু তাই নয়, স্কুলে ফেরা মেয়েটিকে শিক্ষিকারা পড়াশোনার ফাঁকে শেখাচ্ছেন কী ভাবে এলাকার পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। কী করেই বা বিপদ এড়িয়ে নিরাপদে চলাফেরা করতে হয়।
দর্শক নির্মল শাখারী বলেন, ‘‘এত দিন বাল্যবিবাহ সম্পর্কে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম কথা শুনেছিলাম। তখন অত গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু এ নাটকের বাল্যবিবাহের কুফলের বিষয়টি মনে গেঁথে গেল।’’
অন্তরা রানীর বক্তব্য, ‘‘চোখের সামনে কোনও মেয়ের বিয়ে বন্ধ হয়ে গেলে খুব খারাপ লাগত। কিন্তু বাল্যবিবাহের আইনি দিক নিয়ে কখনও মাথা ঘামাইনি। এই নাটক অনেকের চোখ খুলে দেবে।
নাটকের নির্দেশক তথা রচয়িতা এবং ব্রাক কর্মকর্তা অনামিকা দাস জানান, বাল্যবিবাহ রোখার ভাবনা জনমানসে ছড়িয়ে দিতেই এই প্রয়াস।
ব্রাক(পটুয়াখালী, বরিশাল ও ঝালকাঠি জেলা) ডেপুটি ম্যানেজার শেখ শফিকুল ইসলাম এই বাংলাদেশকে বলেন, ব্র্যাকে যতগুলো অভিযোগ আসে তার মধ্যে ৭০% মেয়ে বাল্যবিয়ের শিকার। কোন অসহায় নারীর যদি আইনি সহায়তার দরকার হয় তার পাশে ব্রাক আছে।
তিনি আরও বলেন, এই ধরণের নাটক গ্রামীণ নারী পুরুষদের মাঝে সচেতনতা বোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এ উপজেলায় এভাবে আরও ১০ টি স্পষ্টে ধারাবাহিকভাবে নাটক প্রদর্শনী করা হবে।