মাত্র তিন মাস আগেই গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। দুর্দান্ত টিম পারফরম্যান্সে লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রেখেছে আর্জেন্টাইন সতীর্থরা। অসাধারণ সেই দলের অংশ ছিলেন গঞ্জালো মন্তিয়েলও। এবার সেই ডিফেন্ডারের বিরুদ্ধে উঠেছে ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অভিযোগ।
কয়েক মাস ধরেই ফুটবলের নান্দনিক সৌন্দর্য ম্লান করে দিচ্ছে তারকা ফুটবলারদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড। একের পর এক যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের দায়ে খবরের শিরোনাম হচ্ছেন ফুটবলাররা। মাস দুয়েক আগে ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার হয়ে এখনও কারাবন্দি ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড দানি আলভেজ। সেই রেশ কাটতে না কাটতে সম্প্রতি ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মরক্কান তারকা আশরাফ হাকিমির বিরুদ্ধে। এবার একই অভিযোগ উঠল আর্জেন্টাইন তারকার বিরুদ্ধে।
মন্তিয়েলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন এক নারী মডেল। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি মন্তিয়েলের জন্মদিনে এ ঘটনা ঘটেছিল বলে দাবি করেন ওই নারীর আইনজীবী র্যাকুয়েল হারমিদা। আর্জেন্টিনার ‘রেডিও ১০’ সংবাদমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে হারমিদা দাবি করেন, মন্তিয়েলের বাসায় কিছু লোকের মাধ্যমে এই যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। বুয়েনস এইরেসের লা মাতানজা অঞ্চলে এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন হারমিদা। হারমিদার দাবি, অভিযোগ করার সময় মন্তিয়েলের আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতজনরা সেই নারীকে হুমকি দিয়েছেন।
হারমিদার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মন্তিয়েলের সঙ্গে খুব অল্প সময়ের সম্পর্ক ছিল অভিযুক্ত নারীর। পরিবারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে মন্তিয়েল সেই নারীকে বাসায় নিয়ে যান এবং লা মাতানজায় অনুষ্ঠিত পার্টিতেও নিয়ে যান। ঘটনার শিকার নারী পেশায় একজন মডেল এবং মদ্যপান করেন না। কিন্তু পার্টিতে দুবার মদ্যপানের পর তিনি চেতনা হারান এবং এরপর সেই নারীকে মন্তিয়েলের বাসার বাইরে ছুড়ে ফেলা হয়। সেখানে যৌন নিগ্রহের শিকার হন তিনি। ঠিক কতজন মিলে এ কাজ করেছেন এবং কীভাবে বাসায় ফিরেছেন ভুক্তভোগী নারী, সেটাও জানেন না তিনি।
হারমিদার বরাত দিয়ে ঘটনাটি আরেকটু সবিস্তারে জানিয়েছে লা ওপিনিয়ন। আইনজীবী দাবি করেছেন, দুবার মদ্যপানের পর অচেতন হয়ে পড়েছিলেন সেই নারী। কয়েক ঘণ্টা পর তিনি নিজেকে আবিষ্কার করেন মন্তিয়েলের বাসার গেটের বাইরে সড়কে পড়ে আছেন। হাঁটু রক্তাক্ত। এরপর সেই নারীর সন্দেহ হয় তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন এবং মেডিকেল রিপোর্টে জানানো হয় তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে একাধিক লোক তাকে নির্যাতন করেছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রেডিও অনুষ্ঠানের সঞ্চালক পাবলো ডুগান আইনজীবী হারমিদার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, মেয়েটি অচেতন হলো কীভাবে? একটু রাগত স্বরেই উত্তর দেন হারমিদা, ‘কারণটা আসলে রুচির। সে একজন মডেল, কিন্তু মদ্যপান করে না। আর তাই সেই রাতে দুবার মদ্যপান শেষ করার আগেই অচেতন হয়ে পড়েছিল।’ হারমিদা আরও বলেন, ‘এই যৌন নির্যাতনে কতজন লোক জড়িত, তা সে (নারী) জানে না। তবে মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী, এটি যৌন নির্যাতন।’
অভিযোগ করার আগে সেই নারী এত দিন সময় নিলেন কেন, এমন প্রশ্নেরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন হারমিদা। তার দাবি, ঘটনার শিকার নারীটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। আত্মহত্যার কথাও নাকি ভেবেছিলেন। একটু ধাতস্থ হয়ে ওঠার পর লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন, ‘এ সময়ে সে আইনজীবী খুঁজেছে। আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছে করোনা মহামারির সময়।’