হাতকড়া পরিয়ে স্কুলশিক্ষককে মারধর, ২ কনস্টেবল ক্লোজড
বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি।। নাটোরের বাগাতিপাড়ায় এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় বাগাতিপাড়া মডেল থানার দুই পুলিশ কনস্টেবলকে ক্লোজড করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে নাটোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মাহমুদা শারমীন নেলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি ওই স্কুলশিক্ষক। ক্লোজড করে নাটোর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা দুই কনস্টেবল হলেন- মো. সজীব হোসেন ও মো. আসাদুজ্জামান। এর আগে গত রবিবার তাদের বিরুদ্ধে এক স্কুলশিক্ষককে হাতকড়া পরিয়ে পেটানোর অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগী শিক্ষক বাদল উদ্দিন বাগাতিপাড়া উপজেলার রহিমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
এএসপি মাহমুদা শারমীন নেলী বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি, এক স্কুলশিক্ষকের কাছে মাদক থাকার খবর পেয়ে দুই পুলিশ সদস্য ওই শিক্ষককে তল্লাশি করে। ওই সময় তাকে মেরে আহত করা হয়। খবর পেয়ে রাতেই আমি নাটোর সদর হাসপাতালে গিয়ে আহত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলি এবং প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করি। এসব তথ্য পুলিশ সুপারকে জানালে রাতেই তিনি দুই পুলিশ কনস্টেবলকে ক্লোজড করার নির্দেশ দেন।

এএসপি আরও বলেন, দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আমাদের পেশাদারিত্বের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আইন প্রয়োগের যতটুকু ক্ষেত্র রয়েছে, তার বাইরে যাওয়ারও সুযোগ নেই। দুই পুলিশ সদস্য তাদের দায়িত্বের বাইরে গিয়ে যদি কোনো কর্মকাণ্ড

মাদক থাকার অভিযোগ তুলে রাস্তার মধ্যে হাতকড়া পরিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষককে পেটানো হয়

করে থাকেন, সে কারণে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্তে তারা যাতে কোনো প্রভাব ফেলতে না পারে, তাই তাদের ক্লোজড করা হয়েছে। পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, কোনো ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠান নেবে না। এখন পর্যন্ত স্কুলশিক্ষক লিখিত অভিযোগ না করলেও আমরা আমাদের বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।
ভুক্তভোগী শিক্ষক বাদল উদ্দিন বলেন, রবিবার বিকাল ৪টায় স্কুল ছুটির পর মোটরসাইকেলে নাটোর শহরের বাসায় ফিরছিলেন। পথে ক্ষিদ্র মালঞ্চি এলাকায় সাদা পোশাকে থাকা তিন ব্যক্তি গতিরোধ করেন। এর মধ্যে সজীব খানসহ দুজন নিজেদের পুলিশ কনস্টেবল পরিচয় দিয়ে নানাভাবে তাকে নাজেহাল করতে থাকেন। একপর্যায়ে হাতকড়া পরিয়ে দুই পায়ে লোহার পাইপ দিয়ে বেধড়ক পেটান। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা তার।

এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া থানার ওসি মো. নান্নু খান বলেন, মাদকের তথ্য পেয়ে দুই পুলিশ কনস্টেবল একজন শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন। এ সময় বিদ্যুৎ নামে এক সোর্স ওই শিক্ষককে মারধর করেন। পরে তার কাছ থেকে দুই পুরিয়া হিরোইন পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন ওই দুই কনস্টেবল।