চায়ের দোকানে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ ও তার অনুসারীরা এক সাংবাদিককে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৯ জুন) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনে একটি চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। এছাড়া তিনি চবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য। অভিযুক্তরা হলেন- চবি ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী খালেদ মাসুদ, শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আরাফাত রায়হান। তবে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১০-১২ জনের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সিএফসি গ্রুপের অনুসারী বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ বলেন, সন্ধ্যায় স্টেশনে চা খেতে গিয়েছিলাম। ছাত্রলীগ নেতা খালেদসহ বেশ কয়েকজন সেখানে বসে ছিলেন। একটি চেয়ার খালি থাকায় আমি সেটি নিয়ে আসছিলাম। তখন খালেদ আমাকে বলেন, ‘তুমি এটা কার অনুমতিতে নিচ্ছ? আমি তাকে আগে থেকে চিনতাম। তিনি আমাদের জুনিয়র। তাই বললাম, তুমি করে বলছেন কেন? আমাকে চেনেন? এরপর তিনি আমার সেশন জানতে চান। সেশন বলার সঙ্গে সঙ্গে তার হাতে থাকা চাসহ কাপ আমার মাথায় ছুড়ে মারেন।’ তিনি আরও বলেন, এসময় আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি বলেন, ‘তুই সাংবাদিক হইছোস তো কি হইছে?’ এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আরও ১০-১২ জন আমাকে মারতে শুরু করে। আমার কিডনিতে আগে থেকেই সমস্যা ছিল। তারা আমার পেটে আঘাত করেন। এতে পেট ফুলে যাচ্ছে। ঘটনার পর প্রথমে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি পেটে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চমেকে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত চবি ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ বলেন, আমরা কয়েকজন চায়ের দোকানে বসেছিলাম। তিনি সেখান থেকে খালি চেয়ার নিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি মানা করেছিলাম। তারপর তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমি তাকে চিনি কিনা? পরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। তবে তার পেটে আঘাত করা হয়নি। চবি প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার বলেন, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ভুক্তভোগীকে দেখতে গিয়েছিলাম। আমরা বিষয়টি দেখছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিএফসি গ্রুপের নেতা রেজাউল হক রুবেল বলেন, ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply