হিন্দু সম্প্রদায়ের অষ্টমী স্নানোৎসব উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল নামে। ভগবানের কৃপা লাভ ও পাপমুক্তির আশায় বুধবার (২৯ মার্চ) ভোরে হোসেনপুর উপজেলা সদর থেকে ২ কিলোমিটার পশ্চিমে খুর্শেদমহল সেতুর কাছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে জড়ো হন নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ সব বয়সের লোকজন। প্রতি বছরের মতো এবারও ভোর থেকে চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে ব্রহ্মপুত্র নদে পুণ্যস্নান করতে হাজার হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আসতে থাকেন। তাদের বিশ্বাস, এ সময় ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান খুবই পুণ্যের, এ স্নানে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভ করে পাপ মোচন হয়। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাত ৯টা ১৯ মিনিটে স্নানের লগ্ন শুরু হয়ে শেষ হয় বুধবার (২৯ মার্চ) সকাল ১০টা ৪৯ মিনিটে। এ সময় গীতাপাঠ, মাল্যজপ, ধ্যান, প্রসাদ বিতরণসহ নানা আনুষ্ঠানিকতায় স্নানোৎসবে অংশ নেন লাখো মানুষ। কিশোরগঞ্জ ছাড়াও ময়মনসিংহ, নেত্রকোনাসহ আশপাশের জেলা থেকে লোকজন আসেন স্নান করতে। এ দিকে স্নানোৎসব নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ ছাড়াও প্রস্তুত ছিল ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, অ্যাম্বুলেন্স ও মেডিকেল টিম। হোসেনপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে প্রতি বছর অষ্টমী স্নানের আয়োজন করা হয়। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার সরকার জানান, এবার দেড় লাখেরও বেশি মানুষ স্নানোৎসবে অংশ নেন। হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার জানান, পুণ্যার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিন্দ্য মণ্ডল জানান, অষ্টমী স্নানকে ঘিরে লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে। তাই উপজেলা সদর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পর্যন্ত রাস্তায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদে টহল দিচ্ছে। এ ছাড়া পূজা উদ্যাপন পরিষদের বিপুলসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করে। তাই কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে এবারের স্নানোৎসব সম্পন্ন হয়েছে।
Leave a Reply